ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে গৃহবধু আত্মহত্যা

এম.মনছুর আলম, চকরিয়া:

প্রেম মানেনা ধর্ম,গোত্র জাতি।চুপিয়ে প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে করেন দু’সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণী।বিয়ের সাত মাসের মাথায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে কান্তা বড়ুয়া(১৯)নামের এক গৃহবধু আত্মহত্যা করেছে।স্বামীর ঘরের চালার সাথে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে এমনটাই দাবী করেছেন তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন।থানা পুলিশ সংবাদ পেয়ে বিকাল ৪টার দিকে লাশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে।পুলিশ বলছে ময়নাতদন্তের পর ডাক্তারী সনদ হাতে পেলেই মৃত্যুর আসল রহস্য জানা যাবে।কান্তা বড়ুয়ার শ্বশুর বাড়ির লোকজন কোন ধরণের পুলিশকে অবহিত না করে প্রথমে গৃহবধূকে কথিত ফাঁস খাওয়া অবস্থা থেকে নামিয়ে মাটিতে শুয়ে রাখেন।তার মৃত্যু নিয়ে এলাকায় নানা ধরণের রহস্য দেখা দেয়। কক্সবাজারের চকরিয়ায় উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর ঘুনিয়া ধুপী পাড়া এলাকায় শুক্রবার (১৬ফেব্রুয়ারী) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।নিহত কান্তা বড়ুয়া একই ইউনিয়নের ধুপী পাড়া এলাকার টিটু দাসের স্ত্রী এবং পাশ্ববর্তী বড়ুয়া পাড়ার নিটু বড়ুয়ার কন্য।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়,উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ঘুনিয়ায় এলাকায় হিন্দু পাড়া ও বড়ুয়া পাড়া পাশাপাশি হওয়ায় দু’সম্প্রদায়ের দুই ছেলে-মেয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয।বড়ুয়া পাড়া এলাকার নিটু বড়ুয়ার কন্যা কান্তা বড়ুয়ার সাথে পাশ্ববর্তী ধুপী পাড়ার সুরেশ দাশের ছেলে টিপু দাশের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয়।দীর্ঘদিন ধরে দু’জনের মধ্যে চলে তাদের প্রেমের সম্পর্ক। দুই জন দুই ধর্মের হওয়ায় দুই পরিবারের কেউই তাদের সম্পর্ক মেনে নেইনি।নিহত কান্তা বড়ুয়া এইচএসসি পরীক্ষার পরবর্তীতে ২০১৭সালের পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর ৭ মাস পূর্বে টিপু দাস ও কান্তা বড়ুয়া তাদের দু’পরিবারের অগোচরে পালিয়ে বিয়ে করে চট্রগ্রামে ভাড়া বাসায় জীবন যাপন করেন।পরে টিপুর পরিবার কান্তাকে মেনে নিলে শ্বশুর বাড়িতে সুখেই তাদের দাম্পত্য জীবন। কিন্তু বিয়ের আগে টিপু বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করবে বলে কথা দিয়েছিল কান্তাকে।বিয়ের পরও সেই কথা না রাখায় তার বাপের বাড়িতে যেতে চাইলে টিপু ও তার বাবা-মা কান্তাকে যেতে দেয়নি।এনিয়ে বাকবিতন্ডা হতো স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সাথে কান্তার বলে স্থানীয় সূত্রে জানান।

ফাঁসিয়াখালী ৪নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় ইউপি সদস্য অনিমেষ দে বলেন, দু’গোত্রের ছেলে মেয়েদের মধ্যে প্রেম করে বিয়ে হলেও তাদের মধ্যে কোন ঝগড়া বিবাদ বা অসন্তোষমূলক কোন কর্মকান্ড ছিল না। কারো কাছ থেকে শোনাও যায়নি। হঠাৎ সকালে শুনি ফাঁস লাগিয়ে কান্তা আত্মহত্যা করেছে।নিহতের মরদেহ হাসপাতালে নেয়ার পর জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)মো:বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর নির্দেশে ঘটনাস্থলে যাওয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত চৌধুরী কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,ঘটনাস্থল থেকে কান্তার লাশ উদ্ধার করে মহিলা পুলিশ দিয়ে প্রাথমিক সুরুতহাল রিপোর্ট তৈরী করা হয়েছে। এসময় কান্তার হাত ও গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)মো.বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আত্মহত্যা করা গৃহবধুর লাশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্ত করতে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। ডাক্তারের প্রতিবেদন পেলে কি কারণে মৃত্যু হয়ে তা জানা যাবে। মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

পাঠকের মতামত: